সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা জিপিএফ এর টাকা কি হালাল

সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা জিপিএফ কি হালাল? জানুন এ নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তরসমূহ।

Advertisement

সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা জিপিএফ কি হালাল? বা জিপিএফ এর টাকা কি হালাল? এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বিভিন্ন আলেমদের বক্তব্য ও ইসলামী ফিক্হ ও ফাতাওয়া বিশ্বকোষ থেকে কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পাবেন।

জিপিএফ কি

(GPF) জিপিএফ হচ্ছে General Provident Fund এর সংক্ষিপ্ত রুপ যার বাংলা অর্থ সাধারণ ভবিষ্য তহবিল। সরকারি চাকরীতে যে সকল চাকরীজীবি রাজস্ব খাত হতে বেতন পান তাদের মাসিক বেতন হতে একটি নির্দিষ্ট অংশ কর্তন করে জমা করা হয়। চাকরি শেষে, মোট জমাকৃত অর্থ ও তার উপর নির্দিষ্ট হারে সুদসহ পরিশোধ করা হয়।

Advertisement

সরকারি চাকরিজীবীদের প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত জিপিএফ হিসাব অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়। উক্ত একাউন্টে মাসিক বেতনের একটি অংশ কর্তন করে জিপিএফ হিসাবে যোগ করা হয়। অনলাইনে NID নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে GPF Balance Check করা যায়।

জিপিএফ নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

সরকারি চাকরিজীবিদের যে জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড (জিপিএফ) আছে সেখানে টাকা রাখলে সুদ হবে কি না?

উত্তর: সরকারি চাকরিজীবিদের জন্য সরকারের দেওয়া সব টাকা পয়সা প্রথমবার নেওয়া জায়েজ। কিন্তু যে কোনো ফান্ডে, যেখানে সুদ দেওয়া হয়, তা জিপিএফ হোক বা অন্যকিছু সেখানে নিজের টাকাগুলো রেখে সুদ বা লাভ উঠানো জায়েজ নেই।

এ টাকা তুলে ফেললে হয় নিজে খরচ করতে হবে কিংবা কোনো হালাল জায়গায় বিনিয়োগ করতে হবে। সুদওয়ালা কোনো ফান্ড বা ব্যবসায় লাগিয়ে এর লাভ খাওয়া হালাল হবে না।

উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী

Advertisement

সূত্র: জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতাওয়া বিশ্বকোষ। (ডেইলি ইনকিলাব-এ ইসলামী প্রশ্নোত্তর থেকে প্রশ্নটি নেয়া হয়েছে।)

প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা সুদ হিসেবে গণ্য হবে কি না?

নিচের প্রশ্নটি নেয়া হয়েছে, এনটিভির আপনার জিজ্ঞাসা অনুষ্ঠান (১৭২৫ তম পর্ব) থেকে

প্রশ্ন: আমি পুলিশে কর্মরত আছি। আমার প্রশ্ন, আমাদের চাকরির নানা সুযোগ-সুবিধার মধ্যে একটি হলো প্রভিডেন্ট ফান্ড। আমার প্রভিডেন্ট ফান্ডে প্রতি মাসে আমার মূল বেতন থেকে ৫০০ টাকা বাধ্যতামূলক কর্তন করে এবং বছরে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে। আমিও নিজে এখানে টাকা কর্তন করতে পারি, তবে তা আমার মূল বেতনের বেশি হবে না।

এখন আমার প্রশ্ন, বছর শেষে আমাকে যে লভ্যাংশ দেবে তা কি সুদের পর্যায়ে পড়বে? আমার মতে, যেহেতু আমি সরকারি চাকরি করি, সরকার কর্তৃক বিভিন্ন ভাতার মতোই প্রভিডেন্ট ফান্ডও একটা সুযোগ-সুবিধা। বাকিটা আল্লাহই ভালো জানেন।

Advertisement

উত্তর: ভাই যে মতামত দিয়েছেন, তা শুদ্ধ নয়। কারণ হচ্ছে, তারা সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে  যে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া হবে। এই লভ্যাংশ নাম দিয়েছে কিন্তু সুদের ভিত্তিতে। যেহেতু পার্সেন্টেজ উল্লেখ করে দিয়েছে সুদের ভিত্তিতে।

এ লেনদেনটাকে শুদ্ধ করার পদ্ধতি আছে। ওখানে যে ভাইয়েরা কাজ করে থাকেন, তাঁরা একজন যোগ্য আলেম, যিনি ইসলামী অর্থনীতির ওপর পড়ালেখা জানেন, এ ধরনের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে শুদ্ধ করে নিতে পারেন। তাহলে হয়তো আপনাদের হারাম থেকে বাঁচার পদ্ধতি বেরিয়ে আসবে।

বাকি আপনি যেভাবে স্পষ্ট করেছেন, স্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে এটি সুদ, এটি শুধু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন তা নয়, বরং শরিয়া অনুযায়ী যাঁরা শরিয়ার জ্ঞান রাখেন, তাঁরা সবাই জানেন যে এটি সুদ এবং আপনিও মোটামুটি মানসিকভাবে এ মাসালার ব্যাপারে এতটুকু জানেন যে নির্দিষ্ট হারে যেহেতু লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে, সেহেতু এটি সুদ।

Advertisement

Similar Posts

One Comment

  1. এখন তো হারাম কে হালাল করার জন্য মাসলা ব্যবহার কার হয়।
    উদাহরন :মদের বোতলে পানি খাওয়া যাবে কি না। সব হুজুর বলবে মদ খাওয়া হারাম,মদ ফেলেদিয়ে বোতল ভালো ভাবে ধুয়ে পানি খাওয়া যাবে।পানি তো হারাম না।আমার মতে বোতল টা তৈরী করেছে হারাম দ্রব্য(মদ) রাখার জন্য। এখন মদ ফেলে দিয়ে বোতল হালাল করার তো কোন দরকার নাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।